শেয়ার বাজার কী?

শেয়ার বাজার 

শেয়ার বাজার বা পুঁজি বাজার এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে স্টক এক-চেঞ্জে নিবন্ধিত প্রাইভেট কোম্পানিগুলো তাদের শেয়ার বেচা কেনা করে। যেমন – আপনি কোন কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করলেন মানে আপনি সেই কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার। এখান আপনি চাইলে যখন ইচ্ছা আপনার শেয়ার বিক্রি কর দিতে পারেন। কোম্পানির অগ্রগতির সাথে সাথে শেয়ারের দামও বৃদ্ধি পায়। তখন আপনি সেই শেয়ার বিক্রি করে লাভবান হতে পারেন। বিভিন্ন কারণে শেয়ারের দাম কমে যেতেও পারে, তখন আপনি আপনার শেয়ার বিক্রি করে চাইলে ক্রয় মূল্য থেকে কমে বিক্রি করতে হবে। 

কোম্পানিগুলো কেন শেয়ার বিক্রি করে?

যেকোনো কোম্পানির উন্নয়ন ও বিস্তারের জন্য প্রয়োজন মূলধন তথা অর্থ। তাই মূলধন বৃদ্ধির জন্য কোম্পানিগুলো মানুষের কাছে শেয়ার বিক্রি করে থাকে। যে প্রকিয়ায় কোম্পানিগুলো তাদের শেয়ারগুলি ইস্যু করে থাকে সেই প্রক্রিয়াকে ইনিশিয়াল পাবলিক অফার (আইপিও) বলা হয়।

শেয়ার কত ধরনের? 

প্রাইমারি শেয়ার: শেয়ার মার্কেটে প্রবেশ করতে হলে যেকোনো কোম্পানিকে প্রথমে প্রাইমারি শেয়ারের মাধ্যমে প্রবেশ করতে হয়। মানে নতুন কোম্পানিকে শেয়ার বাজারে ঢুকতে হতে হলে তাকে প্রথমে প্রাইমারি শেয়ার ছাড়তে হবে।  সবাই বলে থাকে প্রাইমারি শেয়ারে কোন লস নেই কিন্তু  সেকেন্ডারি শেয়ারে অনেক রিস্ক। এইরকম কথা কেন শোনা যায় আসুন জেনে নেই। প্রত্যেকটা কোম্পানির শেয়ারেই একটা প্রাথমিক ফেস ভ্যালু থাকে। কোম্পানিগুলো যখন তাদের শেয়ারগুলো মার্কেটে ছাড়তে চায় তখন প্রাথমিক ফেস ভ্যালুর সাথে প্রিমিয়াম যোগ হয়ে নির্দিষ্ট টাকায় শেয়ারটি অফার করা হয়। এসইসি থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর তারা তাদের শেয়ার কেনার জন্য আবেদন করে থাকে। যাকে আইপিও বা ইনিশিয়াল পাবলিক অফার বলা হয়। মনে করুন কোন কোম্পানির প্রাথমিক ফেস ভ্যালু ১৫ /- এবং তারা ৫/-  প্রিমিয়াম সহ শেয়ারের দাম ধরল ২০ টাকা। এখন এই শেয়ার যদি আইপিও এর মাধ্যমে পেয়ে থাকেন তাহলে দাম পরে ২০ টাকা। ইচ্ছা করলেই কেউ এই শেয়ার সেকেন্ডারি বাজেরে বিক্রি করে দিতে পারবেন। সাধারণত প্রাইমারি শেয়ারের যে মূল্য তার তুলনায় সেকেন্ডারি বাজারে এর দাম বেশি হয়ে থাকে। শেয়ারটি যদি সেকেন্ডারি বাজারে ৩০ টাকায় ছাড়া হয়  তখন বিক্রি করলে শেয়ার প্রতি ১০ টাকা মুনাফা পাওয়া যাবে। এই কোম্পানি  যদি সামনে আরও ভাল করবে বলে মনে করেন তাহলে প্রাইমারিতে প্রাপ্ত শেয়ার বেশি দামে বিক্রির জন্য অনেক দিন ধরে রাখতে পারবেন। আর যদি এমন হয় যে আপনি যেই  কোম্পানির প্রাইমারি শেয়ার কিনতে চাচ্ছেন তার প্রিমিয়াম অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে  সেকেন্ডারি বাজারে কেনা দাম থেকে কমেও ওপেন হতে পারে। তাই শেয়ার কেনার আগে কোম্পানিটি ভালো কিনা তা যাচাই করুন। 

সেকেন্ডারি শেয়ার: প্রাইমারি শেয়ার বিক্রি করে দিলে তখন সেটা  সেকেন্ডারি শেয়ারে হয়ে যায়। শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে ভাল জ্ঞান থাকলে সেকেন্ডারি শেয়ার বাজারে না আসাই ভাল। মানে শেয়ার বাজারের বেসিক জিনিসগুলো সম্পর্কে ভাল ধারনা থাকতে হবে। তাহলে শেয়ার ব্যবসায় লাভবান হতে পারবেন।  

কারও মাথায় যদি ভূত চেপে বসে যে শেয়ার বাজার মানেই কোটিপতি হয়ে যাওয়া, তাহলে এই পথে না আসাই ভাল। সব ধরনের ব্যবসাতেই লাভ-লোকসান থাকবে। যদি শেয়ার বাজার নিয়ে প্রচুর জ্ঞান থাকে এবং সেই সাথে যদি পরিশ্রম করতে পারেন, তাহলে ইনশাআল্লাহ ভাল কিছু করতে পারবেন। 

Leave a Comment