অশ্বগন্ধার উপকারিতা

অশ্বগন্ধা কী?

আয়ুর্বেদ চিকিৎসার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল অশ্বগন্ধা। সেই প্রাচীন কাল থেকে নানা ভেষজ চিকিৎসায় এর ব্যবহার হয়ে আসছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতে এর পরিচিতি সবচেয়ে বেশি।  অশ্বগন্ধাকে মানসিক চাপ মুক্তির এজেন্ট বলা হয়, কারণ এই উদ্ভিদগুলো সাধারণত মানসিক চাপ ও দুশিন্তা থেকে মুক্তির জন্য ব্যবহৃত হয়। অশ্বগন্ধার উপকারিতা বলে শেষ করার মত না।

অশ্বগন্ধা নামটি এসেছে মূলত ঘোড়া থেকে, কারণ এর শিকড় থেকে ঘোড়ার ঘামের মত গন্ধ থাকে। অনেকেই বিশ্বাস করের অশ্বগন্ধা খেলে যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

অশ্বগন্ধা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Plantae
বিভাগ:Tracheophyta
শ্রেণী:Magnoliopsida
বর্গ:Solanales
পরিবার:Solanaceae
গণ:Withania
প্রজাতি:Withania somnifera

অশ্বগন্ধার উপকারিতা/ অশ্বগন্ধার ব্যবহার

মানসিক চাপ কমানোড় ওষুধ হিসেবে পরিচিতি থাকলেও অশ্বগন্ধার বিভিন্ন ধরনের কার্যকার্য রিতা আছে। স্বাস্থ্যোন্নয়নে এই ভেষজ উদ্ভিদ কী কাজ করে একবার দেখে নেওয়া যাক।

মানসিক চাপ কমায়: অশ্বগন্ধাতে অ্যাডাপ্টোজেন নামক একধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে। যা মানসিক চাপ, এবং দুশ্চিন্তা কমায় এবং মানসিক চাপ সংক্রান্ত সমস্যা যেমন উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়বিটিস প্রতিরোধ করে।

ডায়বিটিস নিয়ন্ত্রণ করে: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অশ্বগন্ধা তে ডায়বিটিস প্রতিরোধী। এটি ডায়বিটিস আক্রান্তদের রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

বাতের ব্যাথা কমায়: প্রদাহ-বিরোধী হওয়ায় অশ্বগন্ধা বাতের ব্যাথা এবং ফোলা কমায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: অশ্বগন্ধা হচ্ছে অসাধারণ রোগ প্রতিরোধী। বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে রোগপ্রতিরোধী ভূমিকা পালন করে।

ক্ষত নিরাময় করে: ক্ষত নিরাময় দ্রুত হওয়ার জন্য অশ্বগন্ধা খেতে বলা হয়। যদিও এর কোন প্রমাণিত গবেষণা নেই।

ভাল ঘুমের জন্য উপকারী: চাপ এবং দুশ্চিন্তা কমিয়ে অশ্বগন্ধা মাথা ঠান্ডা করতে সাহায্য করে বলে ঘুম খুব ভাল হয়।

যৌনক্ষমতা বাড়ায়: অশ্বগন্ধা পুরুষ এবং নারী উভয়েরই যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিবৃ করে। এটি খেলে পুরুষের শরীরে শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

থাইরয়েড বৃদ্ধি করে: অশ্বগন্ধা শরীরে থাইরয়েড T4 এর মাত্রা বৃদ্ধিবৃ করতে এবং হাইপোথাইরয়েডিজম কমাতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত অশ্বগন্ধা খেলে থাইরয়েড বেশি বৃদ্ধি পেয়ে হাইপারথাইরয়ডিসম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

হার্ট এর জন্যা উপকারী: অশ্বগন্ধা হার্টের পেশিকে শক্তিশালী করে। রক্তনালীর ভিতরে রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না। এছাড়াও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।

মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করে: পার্কিনসন রোগে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করা হয়, যদিও এর কার্যকারীতা প্রমাণিত নয়।

ক্লান্তি দূর করে: কোলেস্টেরল হল একধরণের স্ট্রেস হরমোন, যার বেশি ক্ষরণে শরীরের ক্লান্তি আসে। অশ্বগন্ধা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ক্লান্তি দূর করে।

অ্যান্টি-ভেনম হিসাবে ব্যবহার করা হয়: অশ্বগন্ধার অ্যান্টি-ভেনম ক্ষমতা আছে। যা সাপের বিষের কার্যকারীতা কে দুর্বল ও ধীর করে দেয়।

ত্বকের জন্য উপকারী: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি ত্বকের রূপ চর্চায় ব্যবহার করা হয়। চেহারায় বয়সের ছাপ পরতে দেয় না।

চুলের যত্নে ব্যবহার: অশ্বগন্ধা চুলে পুষ্টি জোগায় এবং চুল দীর্ঘ এর্ঘ বং উজ্জ্বল করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হওয়ার কারণে অকালে চুলে পাক ধরা এবং চুল পড়া বন্ধ হয়।

প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: অশ্বগন্ধা পুরুষ এবং নারী উভয়েরই যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিবৃ করে। এটি খেলে পুরুষের শরীরে শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।\

অশ্বগন্ধা একটি প্রাচীন ভেষজ উদ্ভিদ যার একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। অশ্বগন্ধার উপকারিতা, এটি উদ্বেগ এবং চাপ কমাতে পারে, হতাশার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে, পুরুষদের মধ্যে উর্বরতা এবং টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি করতে পারে এবং এমনকি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। অশ্বগন্ধার সাথে সম্পূরক আপনার স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করার একটি সহজ এবং কার্যকর উপায় হতে পারে।

Leave a Comment